প্রকাশিত : ৮ মে, ২০২০ ১৯:৩২

শুরু হয়েছে দিনাজপুরে বোরো ধান কাটা-মাড়ায়

হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
শুরু হয়েছে দিনাজপুরে বোরো ধান কাটা-মাড়ায়

দিনাজপুরের মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে বোরোচাষীদের ধান কাটা-মাড়ায়। ধানের ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকরা আনন্দের সাথে ধান কাটতে নেমেছে বোরো ইরি ক্ষেতে। মাঠে যেসব ধানে বেশি পাক ধরেছে সেসব ধান আগে কাটছে বোরো চাষীরা। কম্বাইন হারভেস্টর দ্বারা ধান কাটা-মাড়ায় শুরু হয়েছে তাই শ্রমিক সংকট হবে না বলে দাবি করছে কৃষি কর্মকর্তারা।

বিরামপুর উপজেলার কেটরা গ্রামের বোরোচাষী বাদল মন্ডল বলেন, এইবার বোরো মৌসুমে আমি প্রায় ২১ বিঘা জমিতে ইরি ধান লাগিয়েছি। তার মধ্যে ৫ বিঘা জমির ধান পাক ধরেছে। আজ শুক্রবার (৮ মে) সকাল থেকে মাঠে ধান কাটার শ্রমিক লাগানো হয়েছে। গতবারের চেয়ে এবছর ধানের ফলন অনেকটাই ভাল। ১ বিঘা জমিতে ধান কাটতে শ্রমিকদের দিতে হচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে আমার সব মাঠের ধান কাটা-মাড়ায় শেষ হবে। আশা করছি প্রতি বিঘা জমি থেকে ২৫ থেকে ২৬ মণ করে ধান ঘরে তুলতে পারবো।

বিরামপুর কৃষি অফিসার নিকথন চন্দ্র পাল বলেন, উপজেলায় এইবার ১৬ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। গতবারের চেয়ে এবছর ইরি ধানের ফলন ভাল হয়েছে। ৯৭ হাজার মেট্রিক টন ধান ঘরে তুলতে পারবে কৃষকরা।তিনি আরও জানান, এবার ধান কাটা শ্রমিক সংকট হবে না। উপজেলায় ছোট-বড় ৫ টি কম্বাইন হারভেস্টর ও ৭ টি রিপার মেশিন দ্বারা বোরোচাষীরা ধান কাটা-মাড়ায় করছে।

হাকিমপুর উপজেলার জালালপুর গ্রামের কৃষক আকরাম হোসেন বলেন, মুই এইবার আদিবাড়ি বা বর্গাসহ ৩ বিঘা জমিত ইরি ধান লাগাইছু। মাঠত সবার চাই মোর ধান ভাল হয়ছে। একবেলা খাওয়ায়ে দুই জনক ৩০০ টাকার হাজরা নিয়ে মুই ধান কাটবা লাগিছু। আল্লা দিলে ভালই ধান ঘরত তুলমু এবার।

হাকিমপুর কৃষি অফিসার শামীমা নাজনীন জানান, উপজেলার প্রায় মাঠে ধান কাটা শুরু করেছে বোরোচাষীরা। এইবার উপজেলায় ৭২৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। ৩০ হাজার ৩১২ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ধান ক্ষেতে প্রাকৃতিক বা কোন ধানের রোগ-বালায়য়ের আক্রমণ হয়নি। ধানক্ষেতে কম্বাইন হারভেস্টরের মাধ্যমে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। এতেকরে শ্রমিক সংকট হবে না এবং অল্প ব্যয়ে,স্বল্প সময়ে কৃষকরা ধান ঘরে তুলতে পারবে।

দিনাজপুর কৃষি অধিদপ্তরের কৃষি উপ-পরিচালক তৌহিদুল ইকবাল জানান, চলতি বোরো মৌসুমে এইবার জেলার ১৩ টি উপজেলায় প্রায় ১ লাখ ৭১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। করোনা কারণে শ্রমিক সংকট দেখা দিতে পারে তাই কৃষকের মাঝে কম্বাইন হারভেস্টর বিতরণ করা হয়েছে। জেলার প্রায় বোরো মাঠে কৃষকদের ধান কাটা-মাড়ায় জলছে।

নীলফামরীর জলঢাকা থেকে আসা ধান কাটা শ্রমিক সরদার রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর আমরা হিলিতে ধান কাটতে আসি। এইবারও ২১ জন সদস্য নিয়ে এসেছি। হিলির নওপাড়া গ্রামের শামসুল হকের প্রায় ৮০ বিঘা জমির ধান কাটার চুক্তি নিয়েছি। সাড়ে ৩ হাজার টাকা প্রতি বিঘা তিনি দিতে চেয়েছে। তবে আমরা একটু বাড়িয়ে দিতে বলেছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছে কাজ শেষে কিছু বাড়িয়ে দিবে।তিনি আরও জানান, ২১ জন সদস্য মিলে প্রতিদিন ৫ বিঘা জমির ধান কাটা মাড়ায় করে গৃহস্থর ঘরে তুলে দিতে পারি। এতে করে খেয়ে-দেয়ে প্রত্যেকেই প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা পেয়ে থাকি।

উপরে