প্রকাশিত : ১১ মার্চ, ২০২০ ১৬:১৩

নিরাপদ খাদ্যের বড় সমস্যা স্বল্প মেয়াদের চেয়ারম্যান : খাদ্যমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক
নিরাপদ খাদ্যের বড় সমস্যা স্বল্প মেয়াদের চেয়ারম্যান : খাদ্যমন্ত্রী

চাকরির মেয়াদ অল্প থাকা কর্মকর্তাদের বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএসএফএ) চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়াকে সংস্থাটির কার্যকর হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে বড় সমস্যা বলে মনে করছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। আজ বুধবার সচিবালয়ে আমন সংগ্রহ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। এ সময় কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক উপস্থিত ছিলেন।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠনের পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও, এটি এখনও কার্যকর হতে পারেনি- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের জনবল ছিল না। ইতিমধ্যে তারা জনবল নিয়োগ দিয়েছে। প্রত্যেক জেলায় অফিস করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে মূল সমস্যাটা হচ্ছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষে যিনিই আসেন, তারই দেড়মাস-দুই মাস চাকরি থাকে। একজন যাওয়ার পর আরেকজন আসলেন, তিনি দুইমাস-আড়াইমাস পর চলে গেলেন। এরপর চেয়ারম্যান দিতে দিতে, আজ দেব, কাল দেব, দিতে দিতে জনপ্রশাসন...ওইখানে একজন শক্ত লোক ছাড়া কিন্তু হবেও না।’

তিনি বলেন, ‘জনপ্রশাসন অনেক চয়েজ করে একজনকে দিয়েছে, সেটা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকেই দেয়া হয়েছে। উনি আগামী রোববার জয়েন করবেন। আমরা চরম আশাবাদী যে, নতুন জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের নিয়ে মাঠে একেবারে সচেষ্টভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ব।’

গত ২১ জুলাই নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা সারওয়ার জাহান। ডিসেম্বরেই অবসরে যান তিনি। পরে গত ৫ মার্চ নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ পান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল কাইউম সরকার।

চাকরির মেয়াদ অল্প থাকা কর্মকর্তাদের চেয়ারম্যান করা হচ্ছে, তবে কী সরকার নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ব্যাপারে আন্তরিক নয়- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার অবশ্যই আন্তরিক। হয়তো ভালো লোক খুঁজতে গিয়ে...। অনেকেরই কমিটমেন্ট আছে, সৎ, কিন্তু সততার সঙ্গে দেশপ্রেম ও ভেজালমুক্ত করার জন্য যে আসল মনোবাসনা, সেই রকম লোক খুঁজে পাওয়া বিপদ হয়ে যায়। যার কারণে জনপ্রশাসন অনেক খুঁজে খুঁজে একজনকে দিয়েছেন। উনার সঙ্গে আমাদের এখনও দেখা হয়নি। উনি রোববার যোগ দেবেন, তারপর দেখা যাবে ওনার পারফরমেন্স কী?’

স্যানিটারি ইন্সপেক্টরদের নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষে পোস্টিংয়ের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত হচ্ছে- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরাও স্যানিটারি ইন্সপেক্টরদের চেয়েছিলাম। তাদের নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য বলেছিলাম। আমরা চিঠিও দিয়েছি, কিন্তু তারা (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়) দিতে রাজি নন, তারা বলছে- এরা আমাদের স্টাফ, আমরা বেতন দিই, যদি নিতে চান তবে আপনারা বেতন দিয়ে চালান।’

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের একজন সদস্য (অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর) এতদিন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব ছিলেন। গণমাধ্যমে লেখা হচ্ছে তিনি ভালো কাজ করছেন, কিন্তু তার ভেজালবিরোধী তৎপরতার কারণে একটি মহলের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হওয়ায় তাকে চেয়ারম্যান না করে আরেকজনকে নিয়োগ দেয়া হল। এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রীর পাশে বসা কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এটা সরকারি সিদ্ধান্ত কাকে কোথায় দেয়া হবে। উনি ওখানে তো আছেন। উনি খুব ভালো দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি প্রফেশনালি খুবই সাউন্ড। আমি নিজেও তাকে ডেকে অনেক দিক কথা বলেছি। খুবই ভালো।’

‘কিন্তু জনপ্রশাসন সিনিয়রিটিসহ নানা দিক বিবেচনা করে নিয়োগ দেয়। এখানে (বিএসএফএ) ভালো অফিসাররা আসতে চায় না। তারা মনে করে এটা কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান নয়। এখন জনবল হয়েছে, সরকারও আন্তরিক, বিষয়টাকে আমরা কঠোরভাবে নিয়েছি’ বলেন আব্দুর রাজ্জাক।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘ভালো অফিসাররা আসবে। একটু সময় নষ্ট হয়েছে। একেবারে উচ্চ পর্যায় থেকে খাদ্য নিরাপদ কর্তৃপক্ষকে শক্তিশালী, সুশৃঙ্খল ও কার্যকরী করার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। বিগত পোস্টিংটা খুব খারাপ হয়েছে, দুই মাস আড়াই মাসের জন্য দেয়া হলো। এটার ধারাবাহিকতা কীভাবে থাকবে। একজন মানুষ দুই বছর না থাকলে কোনো অবদান রাখতে পারে না। এটা সঠিক হয়নি এটাই ঠিক। খাদ্য মন্ত্রণালয়ও যথেষ্ট উদ্যোগ নিয়েছে এবং উচ্চ পর্যায় থেকেও নির্দেশ আছে। এটুকু আমি আপনাদের বলতে পারি।’

উপরে