প্রকাশিত : ৩ এপ্রিল, ২০২০ ১৫:৩৩

সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জুমার খুতবায়

অনলাইন ডেস্ক
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জুমার খুতবায়

জুমার নামাজে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এছাড়া খুতবায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়।

আজ শুক্রবার বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে বিশেষ মোনাজাত করেন সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মিজানুর রহমান।

তিনি মোনাজাতে দেশ ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করেন। তিনি সবাইকে বেশি বেশি দোয়া ইউনূস পড়ার আহবান জানান। ওই দিন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) আহ্বানে জুমার নামাজ সীমিত আকারে সম্পন্ন করা হয়।

এদিন খুতবার বাংলা বয়ানে সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মিজানুর রহমান বলেন, ‘মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) বলেছেন, যে কোনো ধরনের মহামারির সময় ধৈর্য ধারণ করতে। আল্লাহ কাছে গুনাহর মাফ চেয়ে ক্ষমা চাইতে। আর সবাইকে নিজ নিজ ভূমিতে অবস্থান করতে। কেউ যেনো মহামারি আক্রান্ত এলাকা থেকে অন্য এলাকায় না যান।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই সময় আমাদের সবাইকে ঘরে থাকতে হবে। বিশেষ করে বৃদ্ধ, শিশু, কিশোর আর বাচ্চাদেরকে বুঝিয়ে ঘরে রাখতে হবে। তারা যেন বাইরে বের হতে না পারেন। মহিলাদেরও ঘরে থাকতে হবে।’

বাংলা বয়ান সম্পর্কে জানতে চাইলে মুয়াজ্জিন ক্বারী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বাংলায় বয়ানের ব্যাপারে নির্দেশনা ছিল। তাই ইমাম সাহেব মুসল্লিদের সুবিধার জন্য কিছু সময় বাংলায় বয়ান করেন।’

সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুর ১২টা থেকে কিছু মুসল্লি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে জুমার নামাজ আদায়ের জন্য উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণে গেইটে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। ইফা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মসজিদের ওইসব গেইট তালা দিয়ে আটকে রাখা হয়।

দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে মসজিদের গেইট খুলে দেওয়া হলে মুসল্লিরা মসজিদে প্রবেশ করেন। ১টায় জুমার আজান দেওয়া হয়। এরপর  সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মিজানুর রহমান বাংলায় বয়ান শুরু করেন।

ঠিক সোয়া ১টায় দ্বিতীয় আজান দেওয়ার পর জুমার মূল খুতবা কান্নাজড়িত কন্ঠে শুরু করেন মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মিজানুর রহমান। এরপর ১ টা ২৫ মিনিটে জামাত শুরু হয়।

নামাজ শেষে মুফতি মিজানুর রহমান প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে হেফাজতের লক্ষ্যে মুসল্লিদের নিয়ে মোনাজাত করেন।মোনাজাতে মুফতি মিজানুর রহমান বঙ্গবন্ধু পরিবার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মেয়র মোহাম্মদ হানিফের জন্য বিশেষভাবে দোয়া করেন। উপস্থিত মুসল্লিদের মাঝে কান্নার রোল পড়ে যায়।

মুসল্লিদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে বায়তুল মোকাররমের পরিবেশ। সবার একটাই আকুতি ‘হে আল্লাহ! করোনাভাইরাস দিয়ে আমাদের ধ্বংস করে দিও না। আমাদের গুনাহ ক্ষমা করো। বাংলাদেশসহ বিশ্ববাসীকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে হেফাজত কর। তুমি আমাদের প্রতি রহম করো।’ এ সময় বাইরে দায়িত্বপালনরত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্যকেও মোনাজাতে অংশ নিতে দেখা যায়।

উল্লেখ্য, গত জুমার চেয়ে আজ মুসল্লিদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।

এরআগে, দেশের শীর্ষ পর্যায়ের আলেমদের পরামর্শে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব চলাকালে শুক্রবার জুমার নামাজে মুসল্লিদের উপস্থিতি সীমিত আকারে সম্পন্ন করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ।

এ সম্পর্কে ঢাকা সেন্টার ফর দাওয়াহ অ্যান্ড কালচারের চেয়ারম্যান ও দৈনিক ইনকিলাবের সিনিয়র সহ-সম্পাদক মাওলানা উবাইদুর রহমান নদভী বলেন, ‘বর্তমান এই পরিস্থিতিতে জুমার নামাজ ওয়াজিব না। আমাদের দেশে মসজিদ যেহেতু খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে অতএব ২-৩ জন মিলে জুমার নামাজ আদায় করলেও হবে। অন্যরা ঘরে নামাজ পড়বেন। যাদের একান্ত ঘর-বাড়ি নেই তারাও যেখানে থাকেন সেখানেই অবস্থান করবেন।’

উপরে