রাস্তায় খড় যেন এখন মরণ ফাঁদ
বোরো আর আমন ধানের মৌসুমে হিড়িক পড়ে খড় শুকানো ধানচাষীদের। শহর, গ্রাম-গঞ্জের পিঁচঢালা রাস্তাগুলো বেছে নেই খড় শুকানোর জন্য চাষীরা। আর এতে একাধিক দুর্ঘটনায় পড়তে হয় ছোট বড় যানবহনসহ পথচারীদের। এমনি দৃশ্য চোখে পড়ে দিনাজপুরের হিলি-ঘোড়াঘাট সড়কসহ গ্রামের বিভিন্ন রাস্তায়। শহরের বিভিন্ন রাস্তা যেন এখন খড়ের দখলে।
হিলির বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে দেখা যায়, বোরো চাষীরা মাঠ থেকে ধান কেটে রাস্তায় রাখছে। সেখানেই ধান মাড়াই করে খড় রাস্তায় বিছিয়ে শুকাচ্ছে। হিলি-ঘোড়াঘাট ২৮ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে খড় বিছানো। বাস,ট্রাক, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, সিএজি, অটোবাইক, রিক্সা-ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেলসহ আতঙ্কে যাতায়াত করছে পথচারীরা। বিশেষ করে সাইকেল-মোটরসাইল খড়ে পিঁছলে দুর্ঘটনা ঘটছে। রাস্তায় তৈরি করছে খড়ের পালা। এতে করে দুই পাশের বাড়ছে যানজট।
হিলি সাদুরিয়া নামক সড়কে খড়ের পালার নিকট দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাক চালকের সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, হিলি থেকে ঘোড়াঘট যাওয়ার এই রাস্তা তো এমনিতেই ছোট। তারপর আবার মানুষ খড় শুকিয়ে রাস্তায় পালা করে রেখেছে। দুইটি গাড়ি কিভাবে আসা-যাওয়া করবো। এতে করে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
একজন অটোচালক বলেন, মানুষের এখন আর বিবেক নাই। এভাবে রাস্তায় খড় বিছিয়ে রেখেছে,কখন যে কি হয়। গাড়ি জোরে টানতে পারছিনা। ব্যাটারির চার্জও তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়।
মোটরসাইকেল আরোহী সাংবাদিক মিজানুর রহমান বলেন, খড় তো পিচ্ছিল, গাড়ি চালায়তে ভয় হচ্ছে। আবার বৃষ্টির পানিতে ভিজে আরো পিচ্ছিল হয়ে যায়। কয়েকদিন আগে আমি একটুর জন্য এই রাস্তায় দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে গেছি।
একজন বাইসাইকেল চালক জানান, আমার তো দুই চাকার গাড়ি। খড় এমন ভাবে বিছানো রয়েছে রাস্তায় উঁচুনিচু কিছু দেখতে পাচ্ছিনা। বড় গাড়িকে সাইড দিতে গিয়ে খড়ে পিঁচলে নিজেই পড়ে গিয়েছিলাম।
একজন পথচারী অভিযোগ করে বলেন, মানুষ এখন রাস্তাকে নিজের বাবার সম্পদ মনে করছেন। ধানের সময় হলেই এই রাস্তাগুলোর বেহালদশা হয়। চলাচলে খুব কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছি।
এবিষয়ে হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুর রাফিউল আলম বলেন, ধানচাষীরা এভাবে রাস্তায় খড় রাখতে বা শুকায়তে পারে না। আমি নিজেই বিভিন্ন এলাকায় গাড়ি নিয়ে হ্যান্ডমাইক দিয়ে প্রচারণা করেছি। রাস্তায় খড় শুকানো আইনীয় দন্ডনীয় অপরাধ। আপনারা দ্রুত রাস্তায় থেকে খড় সরিয়ে নিন এবং কখনও এভাবে খড় শুকাবেন না। কেউ এই নির্দেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হিলি (দিনাজপুর)