আত্রাইয়ে টুং টাং শব্দে মুখরিত প্রতিটি কামার পাড়া
নওগাঁর আত্রাইয়ে আসন্ন পবিত্র কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে বেড়েছে কামার পাড়ায় ব্যস্ততার ঘনঘটা। টুং টাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে আত্রাইয়ের কামার পল্লীগুলো। দা,বটি ছুরি চাপাতি বানাতে দিন রাত হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করছেন তারা। করোনা ভাইরাসের কারণে বেশ কয়েক মাস দোকান বন্ধ থাকায় প্রতিবছরের তুলনায় এবার তাদের ব্যবসা কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েছে।
বর্তমানে উপজেলার মির্জাপুর-ভবানীপুর, বজ্রপুর, বান্ধাইখাড়া বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে কামারদের কামারশালা। সারা বছরই কামার পাড়ায় ব্যস্ততা থাকলেও কোরবানির ঈদ আসার আগে সেই ব্যস্ততা পায় ভিন্নমাত্রা। কেউ তৈরি করেছে দা, কেউ তৈরি করেছে চাপাতি আবার কেউ তৈরি করেছে ছুরি। আবার কেউ পুরাতন যন্ত্রপাতিতে ধার দিচ্ছেন। এছাড়া নতুন দা, বটি, ছুরি সারিবদ্ধ ভাবে দোকানের সামনে সাজিয়ে রেখেছেন বিক্রয় করার জন্য। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এখন যেন দম ফেলার সময়টুক নেই কামারপাড়ার কামারদের।
এ ব্যাপারে উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কার্তিক কর্মকার ও সূর্য কর্মকার জানান, লোহা পিটিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করা আমার পেশা, বাপ-দাদার পৈতিক সূত্রে আমরা এই পেশায় জড়িত। একটি মাঝাড়ি ধরণের দা ও কাটারি তৈরি করে ওজন অনুযায়ী ২শ’ ৫০টাকা থেকে ৩শ’ টাকা পর্যন্ত বিক্রয় হয়। সাড়া দিন হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে যে কয়টি জিনিস তৈরি করি তা বিক্রয় করে খুব বেশি লাভ না হলেও পরিবার-পরিজন নিয়ে ডাল-ভাত খেয়ে বেচে থাকার স্বার্থে আদি এই পেশা আমি ধরে রেখেছি। তবে সাড়া বছর কাজ-কর্মের ব্যস্ততা তেমন না থাকলেও কুরবানী ঈদকে সামনে রেখে আমাদের কর্ম ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। সাড়া বছর এই রকম কাজ থাকলে ভালই হত।
বিশ্বনাথ কর্মকার জানান, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে কয়েক মাস দোকান বন্ধ থাকায় এবছরে বেশ লোকশানের মধ্যে রয়েছি। ঈদের কারণে কাজ বেড়ে যাওয়ায় ব্যস্ততা বেড়েছে। আমার বাপ-দাদার মূল পেশা ছিল এটা। তাদের ওই সূত্রে ধরে আমার জীবনেরও শেষ মূহুর্তে এই পেশা ধরে রেখেছি।
এ বিষয়ে ভবানীপুর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. মামুনুর রশিদ বলেন, কামার শিল্পকে আরো আধুনিক করতে এর বাজার সৃষ্টি এবং প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা খুবই জরুরি। সরকারি ভাবে এবং এনজিওর মাধ্যমে আমাদের আত্রাইয়ের কামাদেরকে সুদ মুক্ত ঋন দিলে পাইকারি মূল্যে উপকরণ কিনতে পারলে অবশ্যই এই দেশীয় কামার শিল্প পূর্বের ন্যায় ঘুড়ে দাঁড়াবে বলে আমি মনেকরছি।

আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি: