'ধর্ষন' শব্দের উৎস কি পুরুষ তবে--
হে পুরুষ, তোমার ফাঁসির অর্ডার হয়েছে। শুনতে পাচ্ছ,আবার বলছি ফাঁসির অর্ডার হয়েছে তোমার। তোমাকে বারণ করেছিলাম বারংবার। কথা শুনলে না তো! অদ্ভুতভাবে তুমি নোংরামিটা ধরেই রাখলে। পাঁচ হাজার বছর আগে বা তারও আগে সম্ভবত জন্ম থেকেই এই অকাজটি করে আসছো তুমি। তখন না হয় মানুষের বোধ ছিল না। তাই প্রতিবাদ হয়নি! কিন্তু এই আধুনিক শিক্ষার সময়েও তুমি নিজেকে সংশোধন করলেই না?
একটু চিন্তা করো তো পুরুষ! যে প্রধান কারণে তুমি পুরুষ, সেটা একজন নারীর কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ? তোমার সুগঠিত দেহ, তোমার দেহের আরও অন্যান্য সৌন্দর্য্যের কারণে নারী আকৃষ্ট হয় প্রাথমিকভাবে। আরও বিস্তারিত বললে, তোমার যে গোপনাঙ্গ, সেটা একজন নারীর কাছে পরম আরাধ্যধন। তবে তারও আগে একজন নারী চায় তোমার ভালবাসা। কথায় বলে, নারীর দেহ ছোঁয়ার আগে তার মন ছুঁতে হয়। অথচ, সেই মনকে, সেই ভালবাসা কে উপেক্ষা করে জোর করে তোমার পুরুষাঙ্গ দিয়ে নারীর উপর চড়াও হয়েছো তুমি বারংবার। যেটা একজন নারীর জন্য চরম অপমানই শুধু নয়, তার সারা জীবনের পরম আরাধ্য সাধনার যবনিকাপাতও বটে! আর সেজন্যই তোমার গোপন অঙ্গ কে গোপন না রেখে প্রকাশ্যে কেটে ঝুলিয়ে রাখার জন্য রাস্তায় নেমেছে নারী তথা সমগ্র মানবিক মানুষ। 'ধর্ষন' শব্দটির উৎপত্তি তোমার কারণে! কতটা নোংরা করেছো নিজেকে, ভাবতে পারো? তোমার নাম হয়েছে আজ ধর্ষক। তোমার কারণে সমগ্র পুরুষ জাতি লজ্জিত। আজ শুধু নারীই ধর্ষিত হচ্ছে না, ধর্ষিত হচ্ছে সমগ্র জাতি।
তোমার মেধা মনন, সারা পৃথিবীর সভ্যতাকে সৃস্টি করেছে। তোমার মানবিকতা সেই সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, সেকথা কেউ অস্বীকার করছি না। তবে সেই শ্রেণীর পুরুষের সংখ্যা কমে আসছে ধীরে ধীরে। এর কারণ হলো, অশিক্ষা, কুশিক্ষা, ধর্মীয় গোঁড়ামি আর অবাধ আকাশ সংস্কৃতির নামে অপসংস্কৃতির প্রশ্রয়। তুমি নারীর পোষাক দেখো অথচ নিজের পোষাক দেখো না? তোমার পেশীশক্তি আছে বলেই নারীর পোষাককে ঢাল করে তাকে অপমানিত করবে? নারীরও তোমার পোষাকের প্রতি চোখ যায়, কিন্তু তোমাকে অপমান না করে ভালবাসার মাধ্যমে আঁকড়ে ধরে। তুমিও নারীকে দেখে ভালবাসতে শেখো পুরুষ! গোঁড়ামি পরিত্যাগ করে আলোর পথে এসো। নতুন করে পথ দেখাও নারীপুরুষ সবাইকে।
ভালবাসার যে তৃষ্ণা, তাকে কুঠার আঘাতে চূর্ণ করেছো পুরুষ, শুধু নিজেকে সংবরণ না করতে পারায়! আজ তোমার অবহেলায় তোমারই গোপন অঙ্গ ঝুলছে রাস্তায়। আর কয়দিন পরেই তোমার খন্ডিত মস্তক ঝুলবে কাঠগড়ায় নিষ্পত্তির মাধ্যমে। তৈরি হও পুরুষ। তোমার প্রাপ্য এটাই ছিল। আমি সুযোগ দিয়েছি এতকাল, এখন নিজের দায়িত্ব নিজেই নিতে হবে তোমাকে। আমি এখন শুধুই দর্শক মাত্র।
পার্থ সারথী রুদ্র
সাংস্কৃতিক কর্মী

পার্থ সারথী রুদ্র