প্রকাশিত : ১৭ জানুয়ারী, ২০২১ ১৫:০৩

পঞ্চগড়ে নদী ও খাল পুনঃ খননের ফলে ফিরবে প্রাণ

উপকার পাবে হাজারো কৃষক
পঞ্চগড় প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ে নদী ও খাল পুনঃ খননের ফলে ফিরবে প্রাণ

১৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে পঞ্চগড় জেলার পাঁচটি নদী ও একটি খালের ১৬৪ কিলোমিটার পুনঃ খনন কাজ বাস্তবায়িত হচ্ছে। এরই মধ্যে চার নদী ও একটি খালের পুনঃ খনন কাজ শেষ হয়েছে। করতোয়া নদীর পুনঃ খনন কাজ চলমান রয়েছে। এসকল নদী ও খাল পুনঃ খনন শেষ হলে পানির ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি মৎস্য চাষের উন্নয়নসহ সুরক্ষিত হবে জীব বৈচিত্র। এসব নদীর পানি ব্যবহার করে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা পাবে কৃষকরা। খাল পুনঃ খননের পরই উভয় পাড়ের নতুন মাটিতে বিভিন্ন প্রজাতীর কয়েক হাজার গাছের চারা রোপণ করা হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, মৃতপ্রায় নদীগুলোর প্রাণ ফেরাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ৬৪ জেলার অভ্যন্তরে  ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনঃ খনন প্রকল্পের আওতায় পঞ্চগড়ের ৫টি নদী ও একটি খাল পুনঃ খননের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ৪টি নদী ও একটি খাল পুনঃখনন কাজ শেষ হয়েছে। সদর উপজেলার চাওয়াই নদী ২০ কিলোমিটার, তেঁতুলিয়ার ভেরসা নদীর ১০ কিলোমিটার, দেবীগঞ্জ উপজেলার বুড়িতিস্তার ২০ কিলোমিটার, বোদার উপজেলার পাথরাজ নদী ৩০ কিলোমিটার এবং আটোয়ারী উপজেলার বড়সিংগিয়া খালের ৬ কিলোমিটার পুনঃ খনন কাজ শেষ হয়েছে। পুনঃ খননের পর নদী ও খালগুলো ফিরে পেয়েছে প্রাণ। পঞ্চগড়ের মীরগড় থেকে দিনাজপুর খানসামা পর্যন্ত ৭৮ কিলোমিটার করতোয়া নদীর ড্রেজিংয়ের কাজ চলমান রয়েছে। এই কাজ শেষ হলে মৃত প্রায় করতোয়া নদীর নাব্যতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সারা বছর পানির প্রবাহ বজায় থাকবে। নদী কেন্দ্রীক জীব বৈচিত্র্য নতুন ছন্দ ফিরে পাবে।

দেবীগঞ্জের ভাউলাগঞ্জ এলাকার জুয়েল মন্ডল বলেন, বুড়িতিস্তা নদীটি খনন করায় গভীরতা যেমন বেড়েছে তেমনি শুকনো মৌসুমেও পানি মিলছে। সরকারের মহৎ উদ্যোগের কারণে নদীগুলো যেমন প্রাণ ফিরে পাচ্ছে তেমনি পরিবেশের ভারসম্য রক্ষা হচ্ছে। আটোয়ারীর বড়সিংগিয়া এলাকার মাহাতাব উদ্দিন বলেন, খালটি পুনঃ খনন করায় আমাদের অনেক উপকার হয়েছে। আগে আমাদের জমিগুলো বর্ষাকালে পানিতে ডুবে থাকতো। পানি বের হওয়ার পথ ছিলো না। এখন খালটি পুনঃ খনন করে দেয়ায় পানি সরে যাওয়ার পথ তৈরি হয়েছে। এখন আমরা অনেক ধরণের ফসল ফলাতে পারছি।

পঞ্চগড় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মোছান্না গালিব জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ প্রকল্পের আওতায় পঞ্চগড় জেলায় ১৬৪ কিলোমিটার নদী পুনঃ খনন কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এজন্য প্রায় ১৪৯ কোটি টাকা ব্যয় হবে। ইতোমধ্যে ১৬.৪৫ কোটি টাকা ব্যায়ে ভেরসা নদীর ১০ কিলোমিটার, চাওয়াই নদীর ২০ কিলোমিটার, বুড়িতিস্তা নদীর ২০ কিলোমিটার, পাথরাজ নদীর ৩০ কিলোমিটার এবং আটোয়ারী উপজেলার বড়সিংগিয়া খালের ৬ কিলোমিটারসহ ৬৬ কিলোমিটার পুনঃ খনন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পঞ্চগড়ের অধিকাংশ নদীই স্যা-িসয়েল বালি মাটি। যার কারণে পুনঃ খননের পর বালু আবার নদীতে গিয়ে পড়ছে। বেশীরভাগ নদী পাহাড়ী ঢল থেকে উৎপন্ন। নদীগুলোর  গ্র্যাডিয়েন্ট ঢালুতা অনেক বেশি, তাই সীলট্রেশনের হারও বেশী। এজন্য দীর্ঘমেয়াদী সুফল পেতে হলে নদীগুলোকে পর্যায়ক্রমে পুনঃ খনন কাজ চলমান রাখতে হবে।

 

উপরে