প্রকাশিত : ১১ জুলাই, ২০২১ ২২:১৯

শিবগঞ্জে ২ হাজার খামারী ১শত কোটি টাকার গরু বিক্রয় করা নিয়ে শংকায়

শিবগঞ্জ বগুড়া প্রতিনিধি
শিবগঞ্জে ২ হাজার খামারী ১শত কোটি টাকার গরু বিক্রয় করা নিয়ে শংকায়

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় সব মিলিয়ে প্রায় ২ হাজার খামারী কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে গরু, মহিষ, ভেড়া, ছাগল সহ প্রায় ২৫ হাজার  পশু কোরবানীর হাটে বিক্রয়ের অপেক্ষায় রয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে ভারতীয গরু আসা বন্ধ না লোকসানের আশংকায় রয়েছে খামারীরা। তাদের প্রতিপালন করা প্রায় ১শ কোটি টাকার কোরবানীর পশু বিক্রয় করা নিয়ে রয়েছে শংকার মধ্যে। শিবগঞ্জ উপজেলার শিক্ষিত বেকার যুবক ও বিভিন্ন ফার্মের (খামার) মালিকরা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে চাকুরির পিচে না ঘুরে নিজে উদ্যোক্তা হয়ে গত কয়েক বছর ধরে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন প্রায় ২ হাজার দেশী ও বিদেশী গরু মোটা তাজা ও প্রতিপালনের খামার। আসন্ন ঈদ কে সামনে রেখে দীর্ঘ কয়েক মাস বিভিন্ন বয়সের গরু কিনে ফার্মে প্রতিপালন করে লাভের আশায় অতি যত্নে লালন পালন করা খামারীদের প্রায় ১শত কোটি টাকার গরু বিক্রয় করবেন বলে ধারণা করা হয়েছে। বর্তমানে করোনার কারণে সাধারণ জনগন ও ব্যবসায়ীদের আয়-রোজগার অনেক অংশে কমে যাওয়ায় এবং ব্যবসায়ীদের মন্দভাব এর কারণে আর্থিক সংকটে পড়েছেন। সেই কারণে কাংক্ষিত কোরবানীর পশু না বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই অতি যত্নে পালন করা ফার্মের গরুগুলি নিয়ে সংকায় পড়েছেন খামারীরা। গত বছর করোনার কারণে অনেক খামারীরা গরু বিক্রি করে তাদের পুঁজি ঠিক রাখতে পারেননি। এবারও লাভের আশায় বুক বেঁধে নানা প্রতিকুলতা কাটিয়ে খামার চালিয়ে যাচ্ছেন লাভের আশায়। ঈদের বাজারে কি হবে এই নিয়ে রয়েছেন সংকার মধ্যে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয় থেকে জানা যায়, উজেলার  প্রায় ২ হাজার খামারী  ঈদুল আযহা উপল্েয  ষাড় ১৬ হাজার ৫শত ২০, বলদ ২ হাজার ২শত ৫, গাভী ২দুই ৪৭, মহিষ ৩৫, ছাগল ১৯ হাজার ৮শত ২, ভেড়া ২ হাজার ১শত ৬৬ গবাদি পশু মোটা তাজা করণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে হোটেল রেস্তরা বন্ধ থাকায় ও সাধারণ মানুষের আয় রোজগার কমে যাওয়ায় উপজেলার হাট বাজার গুলোতেও মাংসের চাহিদা তুলনামুলক ভাবে  কমে গেছে। এ বছরও ঈদুল আযহায় করোনাভাইরাসের কারণে গরু হাটে বিক্রি করা ও বাজার দাম নিয়ে হতাশগ্রস্ত হয়ে পড়েছে এখানকার খামারীরা। এ উপজেলায় গবাদীপশু কেনা বেঁচা করার জন্য বড় হাট গুলোর মধ্যে ঐতিহ্যবাহী মহাস্থান হাট, বুড়িগঞ্জ হাট, দাড়িদহ হাট,  ডাকুমারা হাট উল্লেখ করার মতো।  এই হাট গুলো ছাড়াও ঈদুল আযহায়  উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আরও ২৫ থেকে ৩০ টি অস্থায়ী হাট বসে।  করোনার কারণে এসব হাট বসবে কিনা তা নিয়েও সঙ্খিত খামারীরা।  উপজেলার  খামারীদের মধ্যে অনেক বেকার যুবকেরা সরকারি , আধা সরকারি, এনজিও চালিত ব্যাংক ঋণ নিয়ে গবাদি পশুর খামার গড়ে তুলছে। উপজেলার ২ হাজার খামারীরা তাদের ফার্মের প্রতিপালিত গরু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে থাকে। এখন শুধু ঈদুল আযহার আপোয় দিন গুনছে এলাকার গরু খামারীরা।  উপজেলার গরু ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মাদারীপুর, রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম সহ দেশের বড় বড় হাট বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।শিবগঞ্জ উপজেলার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য খামারী রায়নগর ইউনিয়নের খামারী মাস্টার ডেইরী এন্ড পোল্ট্রি ফার্ম এর স্বত্বাধিকারী রেহেনা বেগম, শিবগঞ্জ ইউনিয়নের আলাদীপুর এরুলিয়া পাড়া গ্রামের প্রাণি পল্লী চিকিৎসক  ও খামারী জাফর মন্ডল, বামনপাড়া গ্রামের হারুনুর রশিদ, হাবুল মিয়া সহ প্রায় ২ হাজার খামারীরা বলেন, যদি ভারত থেকে গরু চোরাই পথে না আসে তাহলে আমাদের দেশী গরুগুলি কাঙ্খিত মূল্যে বিক্রি করতে পারবো। এতে করে গত বছরের লোকসানের ঝুঁকি কাটিয়ে উঠে লাভের মুখ দেখবো বলে আশা করছি। তাই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। দেশীয় গরুর ফার্মের সাফল্য ধরে রাখতে এবং বেকার যুবকদের আর্থিক ভাবে লাভবান হয়ে আরো নতুন ফার্ম প্রতিষ্ঠা করে বেকার জীবনের অবসান ঘটিয়ে নিজে উদ্যোক্তা হয়ে দেশ ও জাতির উন্নয়নে এগিয়ে আসা সম্ভব হবে। ভারতীয় গরু আসা বন্ধ না হলে আবারও  লোকসানের আশংকা করছে খামারীরা। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা জাফরিন রহমান আরও বলেন, খামারীদের সার্বনিক পরামর্শ প্রদান করে আসছি।  তাদের পালনকৃত গবাদীপশু নিয়ে যে কোন সমস্যায় প্রাণী সম্পদ বিভাগ পাশে থাকবে।

উপরে