বিরামপুর মুক্ত দিবস পালন
বিরামপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় হানাদার মুক্ত দিবস পালন হয়েছে। এ উপলক্ষে আজ সোমবার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে বেলা ১১ টায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণে আলোচনাসভা, সকল বীর শহীদদের রূহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল ও শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সাংবাদিক মাহমুদুল হক মানিক এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিমল কুমার সরকার, বিরামপুর সার্কেল সিনিয়র এএসপি একেএম ওহিদুন্নবী, থানার অফিসার ইনচার্জ সুমন কুমার মহন্ত, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মেজবাউল ইসলাম মন্ডল, বিরামপুর প্রেসকাবের সভাপতি ড.নুরুল ইসলাম, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি একেএম শাহজাহান, বিরামপুর সরকারি কলেজের উপাধ্য অদ্বৈত্য কুমার, দিনাজপুর সাংবাদিক কল্যান ট্রাস্টএর সভাপতি আকরাম হোসেন, মুক্তিযোদ্ধার সাবেক ডেপুটি কমান্ডার হাবিবুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু বক্কর সিদ্দিকী, গোলাম মোস্তফা প্রমুখ। কর্মসূচিটির আয়োজনের সহযোগী বিরামপুর প্রেসকাব ও মিডিয়া পার্টনার দৈনিক আজকের পত্রিকা।
জানা যায়, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বিরামপুর উপজেলার রয়েছে গৌরবগাঁথা ইতিহাস। এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা বিরামপুরকে পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে রা করার জন্য ঘোড়াঘাট রেলগুমটি, কেটরা শালবাগান, ভেলারপাড় ব্রীজ, ডাকবাংলা ও পূর্বজগন্নাথপুর মামুনাবাদে বাঙ্কার বসিয়ে সতর্ক অবস্থায় থাকতেন। একাত্তরে পাকসেনারা ৪ ডিসেম্বর পাইলট স্কুলের সন্মুখে ও ঘাটপাড় ব্রীজে প্রচন্ড শেলিং করে ভাইগড় গ্রাম দিয়ে তীরমণিতে ৪ টি শেল নিপে করে। দেশ ও স্বাধিকারের জন্য দামাল ছেলেরা যৌবনের দুরন্ত সময়ে দেশ মাতৃকার টানে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিঁয়ে পড়ে শত্রুদের কবল থেকে বিরামপুরকে মুক্ত করে।আরো জানা যায়, স্বাধীনতা যুদ্ধে ৭নং সেক্টরের মেজর নাজমুল হূদা ও মেজর নুরুজ্জামানের নেতৃত্বে ভারতের কালিয়াগঞ্জ তরঙ্গপুর ক্যাম্পে দেশ মাতৃকার টানে ২৮০ জন মুক্তিযোদ্ধা প্রশিণ গ্রহণ করেন ।যুদ্ধে অত্র উপজেলায় ২০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন । পঙ্গু হন ২জন এবং যুদ্ধে মারাত্মক ভাবে আহত হন ১৩ জন মুক্তিযোদ্ধা । বিরামপুরের গোহাটির কূয়া, ঘাটপাড় ব্রীজ, ২নং রাইচ মিলের কূয়া, পূর্ব জগন্নাথপুরে আব্দুল ওয়াহেদের বাগান বাড়ি, ৪নং রাইচ মিলের কুয়া বদ্বভূমি হিসেবে পরিচিত । যুদ্ধ চলাকালীন পাক হানাদার বাহিনী গণহত্যা করে শহীদদের লাশ এইসব স্থানে পুঁতে রাখে । আজো নির্মিত হয়নি কোথাও স্মৃতিস্তম্ভ ।
উল্লেখ্য যে, কেটরাহাটে লোমহর্ষক ও সন্মুখ যুদ্ধে ৭ জন পাকসেনা এবং ১৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা যাওয়ার পর ৬ ডিসেম্বর বিরামপুর শত্রু মুক্ত করে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন। স্বাধীন বাংলার আকাশে উড়ে বিজয়ের লাল সবুজ পতাকা।জানতে চাইলে মুক্তিযোদ্ধার সাবেক ডেপুটি কমান্ডার হাবিবুর রহমান অপরূপ বিরামপুর কে বলেন, বিরামপুর উপজেলায় বর্তমান জীবিত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১৪৪ জন।

বিরামপুর, দিনাজপুর প্রতিনিধি