শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ ৩৯ ডিগ্রী তাপমাত্রা রেকর্ড সৈয়দপুরে
সৈয়দপুরসহ উত্তরের জেলা নীলফামারীতে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। প্রখর রোদে পুড়ছে এ জেলার পথপ্রান্তর। গত এক সপ্তাহের তীব্র রোদের খরতাপে হাঁপিয়ে উঠেছে মানুষজন পশুপাখি। বিশেষ করে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে মানুষের।
শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) নীলফামারীর সৈয়দপুরে তাপমাত্রার পারদ ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছে। যা গত ২৪ ঘন্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। সকালে বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৭ শতাংশ। দুপুরে এসে বাতাসের আর্দ্রতা দাঁড়িয়েছে ৪৭ শতাংশে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক লোকমান হোসেন।
তীব্র তাপদাহে হাঁপিয়ে উঠেছে মানুষসহ পশু-পাখিরাও। একটু স্বস্তির খোঁজে খেটে খাওয়া দিনমজুর ও রিশকা-অটোরিকশা চালকেরা ছায়ার সন্ধানে গাছের নিচে আশ্রয় খোঁজেন। তবে সেখানেও মিলেনি প্রশান্তি কিংবা স্বস্তি।
সৈয়দপুর শহরের রিকশা ভ্যান চালক মহির উদ্দিন। তিনি মূলতঃ সৈয়দপুর বিসিক শিল্প নগরী এলাকায় শিল্প, কল-কারখানা মালামাল পরিবহন করেন। কথা হলে তিনি জানান, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মাত্র ১৫০ টাকা ভাড়া পেয়েছি। এই গরমে রিকশা ভ্যান চালানো অনেক কষ্টের। তাছাড়া রাস্তা-ঘাটে মানুষ চলাচল অনেক কম।
শহরের শহীদ তুলশীরাম সড়কের কাশেম সেলুনের কর্মচারী মো. খুরশিদ আলম। শুক্রবার কথা হলে ওই নরসুন্দর বলেন, কি আর বলবো ভাই। ঈদের পর এমনিই দোকানে কাজকর্ম নেই। তারওপর আবার গত কয়েকদিনের তীব্র গরমে মানুষজন একেবারে বাইরে আসছেন না। ফলে আয় রোজগার নেই। পাঁচ সদস্যের পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে দিন অতিবাহিত করছি।
বিমানবন্দরে অবস্থিত আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ লোকমান হাকিম জানান, গত ২৪ ঘন্টায় নীলফামারীর সৈয়দপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা বিগত চার বছরের মধ্যে এ অঞ্চলের সর্বোচ্চ। একই দিনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২৮ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
লোকমান হোসেন আরও বলেন, নীলফামারীর আকাশে মেঘ দেখা যাচ্ছে। ফলে ২/১ দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. মো. মোহাইমিনুল ইসলাম জানান, চলমান বৈরী আবহাওয়ার কারণে উপজেলায় সর্দি, কাশি ও মৌসুমি জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। হাসপাতালের বহির্বিভানে প্রতিদিন অসংখ্যক রোগী চিকিৎসার জন্য আসছেন। ফলে এখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা আগত রোগিদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। এ সব রোগীর মধ্যে বেশির ভাগই সর্দি, কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত রোগী।

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি