রেলওয়ের জায়গায় পৌর মেয়রের আত্মীয়-স্বজনদের মার্কেট নির্মাণ
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌরসভার মেয়র ও পৌর বিএনপি’র সভাপতিbতোফাজ্জল হোসেন ভুট্টুর নিজের ভাই, ভাতিজা ও দলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধে পৌরসভার নক্সা ছাড়াই অবৈধভাবে রেলওয়ের জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে। ওই মাকের্টে ১০টি দোকান রয়েছে, যার মধ্যে অর্ধেক দোকান পৌর নকশা ছাড়াই নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়েছে। বাঁকি দোকান টিন দিয়ে ঘিরে দখল করে রাখা হয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, সান্তাহার পৌরসভার ছয় নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত রেলওয়ের একটি পরিত্যাক্ত জলাশয় ৮০ দশকে পৌরসভার অর্থায়নে ভরাট করে সেখানে একটি মিনি বাসষ্টান্ড নির্মানের সিদ্ধান্ত নেয় পৌর কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে ৮০ দশকের তৎকালীন সাবেক পৌর মেয়র মরহুম আমিরুল ইসলাম মঞ্জু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কাগজে কলমে যোগাযোগ শুরু করেন। এরপর পরবর্তীতে নির্বাচিত সাবেক মেয়র গোলাম মোরশেদ এবং পরবর্তী মেয়র ফিরোজ মো. কামরুল হাসান রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কাগজে কলমে যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন। সে সময় জায়গা হস্তান্তর বিষয়ে কাজের অনেকটা অগ্রগতি হয়। সাবেক মেয়র ফিরোজ মো. কামরুল হাসান তার মেয়াদে ওই স্থানে পৌর মিনি বাস ষ্ট্যান্ডের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন। বর্তমান মেয়র তোফাজ্ঝল হোসেন ভুট্টু টানা তিন মেয়াদে মেয়রের দায়িত্ব পাওয়ার পর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে সকল যোগাযোগ থেমে যায় এবং তার মেয়াদে জায়গাটির অবৈধ দখল শুরু হয়। মেয়রের স্বজন ও প্রতিবেশীরা জায়গা দখল করে একের পর এক দোকান নির্মাণ শুরু করেন। অবৈধ দখলদারদের দখল ও অবৈধ ভাবে স্থাপনা নির্মাণের কারণে বিপুল পরিমান টাকা ব্যয়ে ভরাট করা জায়গাটি বাসস্ট্যান্ড করার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। সর্বশেষ মেয়রের ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান রেন্টু, ভাতিজা তোফায়েল হোসেন লিটন ও দলীয় কর্মী সহ আরো কয়েকজন প্রথমে টিন দিয়ে ঘিরে জায়গা দখল করেন। সম্প্রতি রাতের আঁধারে টিন ঘেরা জায়গায় গোপনে একের পর এক দোকান নির্মাণ করেন। বর্তমানে প্রথম সারির কয়েকটি দোকান নির্মাণ শেষে ভাড়া
দওয়া শুরু হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জনা গেছে এই সকল দোকান নির্মাণে পৌরসভার অনুমতি বা কোন প্রকার নক্সার অনুমোদন পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। অপরদিকে রেলওয়ে ভূ-সম্পত্তি বিভাগ অবৈধ স্থাপনার কোন প্রকার লাইসেন্স ও প্রদান করেননি। সান্তাহার রেলওয়ে ভূ-সম্পত্তি বিভাগের কানুনগো মহসিন ইসলাম বলেন, বর্তমানে রেলওয়ের বাণিজ্যিক লাইসেন্স প্রদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। লাইসেন্স ছাড়াই ওই সকল দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে দোকানের এক ভাড়াটিয়া রাশেদ হোসেন বলেন, মেয়রের ভাতিজার নিকট থেকে তিনি দোকান ভাড়া নিয়েছেন। দোকানের বৈধতা আছে কিনা তা তার জানা নেই। এ বিষয়ে কয়েকজন দোকান মালিকের সাথে কথা বলতে চাইলে তারা কেউ কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি।
বিষয়টি নিয়ে সান্তাহার পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টু বলেন, জায়গাটি রেলওয়ের। রেলওয়ের জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করার বিষয়টি পৌর কর্তৃপক্ষ অবহিত নয়। পৌরসভা থেকে দোকান ঘর নির্মাণের কোন নক্সাও দেয়া হয়নি। যারা ওই জায়গায় দোকান ঘর নির্মাণ
রেছে তারা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে করতে পারে এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।

আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ